বাংলাদেশি তৈরি পোশাকে শুল্ক তুলে দিতে ইন্দোনেশিয়াকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে ফরেন সার্ভিস কনসাল্টেশন শীর্ষক (এফওসি) ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া প্যাসিফিক এবং আফ্রিকার মহাপরিচালক, আবদুল কাদির জেলানি নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে দুই পক্ষই প্রারম্ভিক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের উপর জোর দেয়। এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্ভাব্য রপ্তানি আইটেমগুলিকে শুল্কমুক্ত প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
দ্রুততম সময়ের ভিত্তিতে মুলতুবি সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি সই, সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা অনুসরণ এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি নিয়েও কথা হয় বৈঠকে। এ সমস্যা সমাধানে দুই দেশ তাদের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের আরও বেশি সফর বিনিময় এবং ঘন ঘন একক ও বিষয়ভিত্তিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করার কথা হয়েছে।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষি প্রক্রিয়াকরণে ইন্দোনেশিয়ার হালাল বাণিজ্য এবং ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে বিনিয়োগের বাজারে প্রবেশাধিকার চায়।
পররাষ্ট্রসচিব মোমেন দুই দেশ সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, গভীর সমুদ্রের মাছ ধরা এবং উপকূলীয় অঞ্চল সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
দুই পক্ষই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াই, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রপ্তানি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন, নৈতিক মাইগ্রেশন, সংসদীয় আদান-প্রদান এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করার ক্ষেত্রে সহযোগিতায় একমত হয়।
দুই দেশই দুই দেশকে দেয়া এন্ট্রি ভিসা দেয়ার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এটি পর্যটন বাড়াতে সহায়তা করবে আশা করছে ঢাকা ও জাকার্তা।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতার আশ্বাস
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টায় বাংলাদেশের পাশ থাকার আশ্বাসও ইন্দোনেশিয়া।
আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশটির প্রতি ধন্যবাদও জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এবারের আসিয়ান সম্মেলনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে ইন্দোনেশিয়ার অব্যাহত সমর্থন চেয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানায় ইন্দোনেশিয়া।
আজকের বৈঠকে দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী যথাযথভাবে উদযাপন এবং সম্মিলিতভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সম্মত হয়েছে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, হাই লেভেল ভিজিট, বাণিজ্য মেলা, ঢাকা-বালি রুটে সরাসরি ফ্লাইট শুরু এবং দুই দেশের জাতির পিতার জীবনী স্ব স্ব ভাষায় অনুবাদের ও সিদ্ধান্ত হয়।